Our social:

Wednesday, October 17, 2018

Bidaay Byomkesh full movie Download



ব্যোমকেশ বৃদ্ধ হলেন, ঋদ্ধ হলেন কি? 

কনসেপ্টটা কিন্তু দুর্দান্ত ছিল। এই সময়ে, এই মুহূর্তে, পাল্টাতে থাকা সামাজিক হিসেবের মধ্যে যদি ব্যোমকেশ বক্সীকে এনে ফেলা যায়, তাহলে কী হয়? ঘোর বাস্তব চিন্তা। ব্যোমকেশ বৃদ্ধ, আষ্টেপৃষ্ঠে সংসারী ব্যোমকেশের স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে, বন্ধু বিয়োগও। ছেলে অভিমন্যু, বৌমা, নাতি সাত্যকি, নাত-গার্লফ্রেন্ড তুন্নাকে নিয়ে তার ভরা সংসার। এর মধ্যে যদি ব্যোমকেশ-পুত্রই হয়ে যায় অপরাধী। তাহলে কী হয়?
কিন্তু প্রশ্ন তো এক্সিকিউশনে। প্রস্থেটিক মেক-আপে না হয় যুবক আবীরকে বৃদ্ধ করা গেল, কিন্তু তাই বলে শারীরিকভাবে প্রচণ্ড ফিট সত্যান্বেষী কী করে বৃদ্ধ বয়সে এতটাই অথর্ব হয়ে যায় যে থেমে থেমে, প্রায়ই জড়ানো গলায় কথা বলে, কুঁজো হয়ে লাঠি ভর দিয়ে চলে? কেনই বা ব্যোমেকেশের মতো তার সময়ে সারাক্ষণ আপ-টু-ডেট থাকা মানুষ বৃদ্ধ বয়সে এতটা অতীত-বিলাসে ব্যস্ত থাকে সবসময়?
অথবা ক্লাইম্যাক্স সিনটা ভাবুন। যে আসল অপরাধী, সে পাত্রপাত্রীদের দিকে বন্দুক তাক করে ‘কুমীরডাঙ্গা’ খেলবে বলে রেডি, এই সময় মা-বাপ-ছেলের স্বীকারোক্তির বৃত্তান্ত শুরু হল। মানে যতক্ষণ না স্বীকারোক্তি শেষ হবে, সারা সিনেমায় দেখানো টুকরো, টুকরো দৃশ্যের শেষ জোড়গুলো লাগানো যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত অ্যাকশন শুরুই হবে না। আজকের দিনে এসব হয়? অপরাধীরা এমন লক্ষ্মীসোনার মতো অপেক্ষা করে?
মানে আজকের দিনের বাঙালি দর্শক, যাঁরা ‘বিদায় ব্যোমকেশ’ দেখতে ভিড় করছেন, তাঁদের তো হাতের মুঠোয় বিশ্ব-বিনোদন। তাঁরা তো বাস্তবধর্মী আরও নানা বিষয় নিয়ে তৈরি ছবিটবি দেখছেন। তাঁরা কি খুব সহজে এই অতিনাটকীয়তা মেনে নিতে পারবেন?

আরও প্রশ্ন। কেনই বা যে আসল অপরাধী তার সারা সিনেমায় গোঁফ থাকে অথচ শেষ দৃশ্যে গোঁফ কামানো? কেনই বা ডিসিপি পদের এক অফিসারের উপস্থিতি সত্ত্বেও আহত অপরাধীকে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে মেরে ফেলা হল?
এগুলো তো বড় প্রশ্ন। ছোটখাটো প্রশ্নের ফিরিস্তি দিলে মাথা খারাপ হয়ে যাবে। ফাইলকে কেন ডায়েরির মতো দেখতে? কেনই বা বৃদ্ধ ব্যোমকেশ চশমা পরে ঘুমোয়? বৌমা কেনই বা ধারাবাহিকের মহিলাদের মতো সারাক্ষণ সেজেগুজে থাকে?

তবু এর মধ্যে একটা জিনিসই ভালো লাগে। সাত্যকি-বেশী যুবক আবির আর তুন্না-বেশী সোহিনীর রসায়ন। মিষ্টি। তাদের সংলাপগুলোও সেরকমই। কিন্তু বৃদ্ধ অবিরের সংলাপ সব জায়গায় স্পষ্ট নয়, যার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই রহস্যের প্রয়োজনীয় কিছু সূত্র শ্রুতিগোচর হয় না।

এর ফলে যা হয়, তা হল একটি থ্রিলারের আশায় গিয়ে আমরা পাই একটি হোঁচট খেতে থাকা ফ্যামিলি-ড্রামা যার মধ্যে থ্রিল অল্পই। দেবালয়ের প্রথম সিনেমা ‘রোগা হওয়ার সহজ উপায়’। খারাপ ছিল না কিন্তু সিনেমাটা। ভাবনাতেও নতুনত্ব ছিল। কিন্তু তাতেও শেষে গিয়ে ঘেঁটে ফেলার একটা প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। ‘বিদায় ব্যোমকেশ’-এ প্রবণতাটা আরও বেশি বই কম নয়। অন্তত আমার তাই মনে হয়েছে।
তবে তাতে কিছুই এসে যাবে না। কারণ বাস্তবটা হচ্ছে যে কোনও কিছুর সঙ্গে ব্যোমকেশ শব্দটা বসালেই বাঙালি বাজারের কাটা মাছে মাছির মতো ভিড় জমাবে। আর আবির চট্টোপাধ্যায় যা-ই করুন, মহিলারা তাঁকে একটিবার দেখতে হলে যাবেনই। সেটাই ঘটছে। তাই সিনেমাটা আদতে যা-ই হোক, চলবে ভালোই।

0 comments:

Post a Comment